জাকারিয়া : খেজুর পছন্দ করেন না এমন মানুষ মনে হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। খেজুরের উপকারিতা অনেক, আবার এটি খেতেও সুস্বাদু।
খেজুর খেতে খুব মিষ্টি ও চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
তবে চিনিতে যে পরিমাণ শর্করা আছে খেজুরে তার একদম নেই। খেজুর ফ্রুকটোজের উৎস।
খেজুরে রয়েছে ভিটামিন– এ, ভিটামিন– ই, ভিটামিন– কে, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, প্রোটিন, ফাইবার, র্কাবস, ক্যালোরি, ক্যালসিয়াম, অ্যামিনো এসিড, কোলিন, ফসফরাস, সোডিয়াম, দস্তা এবং পানি সহ আরও অনেক পুষ্টি উপাদান।
আসুন জেনে নেই নিয়মিত খেজুর খেলে কি কি উপকার পেতে পারেন বা খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে
খেজুর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে
নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে।
৪/৫ টি খেজুরের মধ্যে ৮০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম থাকে। যা রক্তনালী গুলোকে পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে।
মস্তিষ্ক সতেজ রাখে
মস্তিষ্ককে সতেজ রাখতে খেজুর উপকারী ভূমিকা পালন করে।
প্রতিটি খেজুরে থাকে ২ গ্রাম কোলিন ও ভিটামিন- বি, যা মস্তিষ্কের বুস্টারের জন্য ভালো।
কোলিন মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত জরুরি, বিশেষত বাচ্চা এবং বয়স্কদের জন্য।
খেজুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
তাজা বা শুকনা যে কোন অবস্থাতেই খেজুরে থাকে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট। যার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
একটি খাদ্য পরীক্ষাগারের গবেষণায় দেখা গেছে যে মদিনার খেজুরে অন্যান্য যায়গার খেজুরের তুলনায় এন্টিঅক্সিডেন্ট বেশি।
এন্টিঅক্সিডেন্ট চুল ও ত্বকের যত্নে উপকারী।
খেজুর ডায়াবেটিস ও চর্বি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে
অনেকেই ভাবেন খেজুর খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যায়, যা একটি ভুল ধারণা।
ডায়াবেটিস নিয়ে গবেষণা করেন এমন গবেষকদের মতে, খেজুরে ক্ষতিকারক চিনির প্রভাব নেই।
খেজুরের উপকারিতার শেষ নেই, এটি ব্লাড সুগার বা ফ্যাট নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়তা করে।
হাড়ের ক্ষয়রোধ করে
বয়স বাড়তে থাকলে হাড়ের ক্ষয় সহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
খেজুরে থাকা কপার,ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন- কে, সিলিনিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে।
তাই হাড়ের দুর্বলতা দুর করতে নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন।
দেহের ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক
অনেকেই নিজের কম ওজনের কারণে দুশ্চিন্তায় ভোগেন।
অতিরিক্ত মোটা হওয়া যেমন ভালো না তেমনি শুকনা, দুর্বল শরীরও কারো কাম্য নয়।
খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি, যা ওজর বৃদ্ধিতে কাজ করে।
এজন্য ওজর বাড়াতে খেজুর আপনার ডায়েটে সংযোজন করতে পারেন।
দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখে
চোখের যত্নে খেজুরের ভূমিকা অনন্য। এতে থাকা ভিটামিন – এ, জিয়াযেন্থিন সহ আরও অনেক কার্যকারী উপাদান রেটিনাকে সুস্থ রাখে।
প্রতিদিন খেজুর খেলে দৃষ্টি শক্তি ভালো থাকে। ভিটামিন- এ রাতকানা রোগের জন্য উপকারী।
চুল পড়া কমায়
চুলের যত্নের জন্য খেজুর খুবি উপকারী। আয়রনে সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে খেজুর মাথার চুলের গোঁড়ায় রক্ত চলাচল ঠিক রাখে এবং চুল গজাতে সাহায্য করে।
তাই চুল পরা কমাতে নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন।
খেজুর খেলে ত্বক ভাল থাকে
খেজুরে থাকা ভিটামিন- সি এবং ভিটামিন ডি ত্বকের নমনীয়তা বজায় রাখে।
ত্বককে নানা ধরনের সমস্যা মোকাবেলায় সহায়তা করে। খেজুরে ফাইটোহরমনস রয়েছে যা ত্বকে বয়সের ছাপ পরতে বাধা দান করে।
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপকারী
খেজুর খেলে মহিলাদের ক্যালোরির ঘাটতি পূরণ হয়। সাধারণ অবস্থা থেকে গর্ভবতী মহিলাদের প্রায় ৩০০% ক্যালোরি বেশি প্রয়োজন হয়।
এ অবস্থায় মহিলারা বেশি ক্যালোরি যুক্ত খাবার পছন্দ করেন। এক্ষেত্রে খেজুর কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে এবং এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই।
খেজুর মেয়েদের জরায়ুর পেশিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
খেজুর পুরুষের যৌনশক্তি বৃদ্ধি করে
গবেষকদের মতে খেজুরে থাকা অ্যামিনো এসিড পুরুষের যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে।
এছাড়াও বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে খেজুর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে।
এতে থাকা উচ্চমাত্রার পটাসিয়াম ডায়রিয়া উপশমেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
এসকল উপকারিতার জন্য আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে খুব সহজেই খেজুর যুক্ত করতে পারেন।
তথ্যসূত্র: স্টাইলজকেয়ার এবং হেলথলাইন।
অনলাইনপ্রেস/জেএ/এনজে