আজঃ শুক্রবার ৩১-১০-২০২৫ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ সময় মিটিং সেবা বঞ্চিতদের ক্ষোভ

  • আপডেটেড: বৃহস্পতিবার ১৮ Sep ২০২৫
  • / পঠিত : ৯৯ বার

মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ সময় মিটিং সেবা বঞ্চিতদের ক্ষোভ



নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সভাকক্ষে এই সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাইয়াজ আহমদ ফয়সল।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না। স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করতে তিনি অভিযোগ বক্স স্থাপনের ঘোষণা দেন। ইউএনও বলেন, “রোগীরা ডাক্তারদের সেবা ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যেকোনো অনিয়ম সম্পর্কে মতামত বা অভিযোগ এই বক্সে জমা দিতে পারবেন। ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও প্রয়োজনে অভিযোগ দিতে পারবেন। প্রতি মাসে বক্স খোলা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সভায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের অপ্রতুল বেতন প্রসঙ্গও আলোচনায় উঠে আসে। বক্তারা বলেন, “মাত্র দুই হাজার টাকা বেতনে কারো পক্ষে স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব নয়। তাদের বেতন বাড়াতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাসুদুর রহমান, মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ বাবলুর রহমান খান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ মো. ইকবাল হোসেন, সাবেক সভাপতি মো. মুছা, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু, উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আমির ফজলুল হক ও সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মনিরামপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এস. এম. মজনুর রহমান, দৈনিক প্রতিদিনের কণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তাকিম আল রাব্বি সাকিব, সাংবাদিক শাহাজান শাকিলসহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।

চিকিৎসকদের মধ্যে ছিলেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার অনুপ কুমার বসু, ডা. সুমন কবীর, ডা. ইদ্রিস, ডা. ফেরদৌস সুলতানা ডায়না, ডা. নাহিদ হাসান, ডা. ফরিদুল ইসলাম ও ডা. সাইফুদ্দীন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডা. রুহুল আমিন।

সভায় অংশগ্রহণকারীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা ও পরিবেশ উন্নয়নে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

এদিকে দীর্ঘ সময় ধরে মিটিং করায় আগত রোগীদের সেবা দেয়ার মতো কোনো ডাক্তার না থাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সঃ ‎ডাক্তার সব মিটিংয়ে,রোগী দেখবে কে শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের জানা যায়


সাংবাদিক এস এম তাজাম্মুল জানান ১ম বারের মতো মা হবে ৯ মাসের গর্ভবতী ঝুমুর (২০) ! মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউটডোরের গর্ভবতী নারীদের নির্ধারিত ১২৬ নং রুমের সামনে হতে টিকিট কাউন্টারের আগ পর্যন্ত দীর্ঘ লাইনের সিরিয়ালে ৪ মাস,৬ মাস, কোন কোন মহিলা ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অসুস্থ্য শরীর নিয়ে ঐ দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ার পরও গাইনী বিষয়ের ডাক্তারের সেবা পাইনি কোন গর্ভবতী নারী। সকাল ৯ টাই এসে টিকিট কাউন্টার হতে টিকিট কেটে সিরিয়ালে দাড়িয়ে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে আবার বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিরুদ্ধে।


‎অভিযোগ উঠেছে, স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মিটিংয়ে সকল ডাক্তাররা ব্যাস্ত থাকায় ২ ঘন্টা ৩০মিঃ রোগীরা পড়েছে চরম ভোগান্তীতে।


‎বুধবার সকালে ১৬ই সেপ্টঃ সরেজমিনের চিত্র মোতাবেক শুধু ১২৬ নং কক্ষের ৪২ জন নারী না স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগের কোন কক্ষেই পাওয়া গেলোনা চিকিৎসা সেবার জন্য নির্ধারিত সরকারি ডাক্তারদের। গর্ভবতী নারীদের ঐ লম্বা লাইনে দাড়িয়ে থাকা নারীদের মধ্য বেশ কয়েকজনকে দেওয়ালে মাথা ঠেকিয়ে দিয়ে দাড়িয়ে যন্ত্রনায় কাতরাতেও দেখা গেছে। সমস্যার কথা জানতে চাইলে উপজেলার চাঁদপুর মাঝিয়ালী গ্রামের ঝুমুর বেগম(২০) অভিযোগ করেনে,সকাল ১০টা হতে দাড়িয়ে আছি ভাই! আর কখন ডাক্তার আসবে! মিটিংয় কি শেষ হয়েছে! আমিতো আর দাড়াতে পারছিনা ভাই। তথ্য সংগ্রহ করছে এ কথা জানতে পেরে ডাক্তারের রুম হতে মুখ ফিরিয়ে গর্ভবতী নারীরা সকলেই অভিযোগ করতে উৎসাহী হয়ে পড়ে।


‎ঝুমুরের মতো প্রায় অর্ধশত গর্ভবতী নারীকে দীর্ঘ সময় ধরে দাড়িয়ে রেখে সরকারী হাসপাতালের ডাক্তারদের এমন আচরনে ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলার সুন্দলপুর গ্রাম হতে নিজের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গাইনী বিষয়ক ডাক্তার ডাইনা’কে দেখাতে আসা মোঃ জাকারিয়া হেসেন জানান, ডাক্তার ডায়না সপ্তাহে একদিন (বুধবার) মণিরামপুর হাসপাতালে রোগী দেখেন। আর একদিন(সোমবার) অপারেশন (সিজার) করেন,আমি আজকে যদি আমার স্ত্রী’কে দেখাতে না পারি তাহলে ১ সপ্তাহ পর আবার আসতে হবে। যদি এই সময়ের মধ্য কোন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তার দায়ভার কে নিবে! আমরা গরীব বলে ৫শ/১ হাজার টাকা ফিস দিয়ে ডক্তার দেখাতে পারিনা,তাই ফ্রী সেবা নিতে সরকারি হাসপাতালে ছুটে আসি। একানে যদি আমরা সেবা না পায় তাহলে পাবো কোথায়! তিনি এমনও অভিযোগ করেন,ডাক্তার সব মিটিংয়ে রোগী দেখবে কে!


‎খোজ নিয়ে জানা যায়,মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সভা কক্ষে উপজেলার স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে মতবিনিময় সভা চলমান থাকায় রোগীদের এই বিড়ম্বনা সৃষ্টি হয়।যে মতবিনিময়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফায়াজ মোহাম্মদ ফয়সালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না।

‎বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মনিরামপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ মাসুদুর রহমান, মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ বাবলুর রহমান খান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এড. শহীদ মোঃ ইকবাল হোসেন, সাবেক সভাপতি মোঃ মুছা, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু,মণিরামপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এস.এম মজনুর রহমান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যাক্তিবর্গ।


‎ডাঃ রুহুল আমিনের সঞ্চালনায় চিকিৎসক দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ অনুপ কুমার বসু,ডাঃ সুমন কবীর, ডাঃ ইদ্রিস, ডাঃ ফেরদৌস সুলতানা ডায়না, ডাঃ নাহিদ হাসান, ডাঃ ফরিদুল ইসলাম, ডাঃ সাইফুদ্দীন প্রমূখ। উল্লেখিত, তথ্য সূত্র মোতাবেক ৮ জন ডাক্তারের সকলেই ঐ মিটিংয়ে উপস্থিত না থেকে শিডিউল করে বা যদি ২/৩জন ডাক্তার সেবা দিয়ে বাকিরা মিটিংয়ে থাকলেও মোটামুটি রোগীদের একটু ভোগান্তী কম হতো।


‎জরুরী ও বহির্বিভাগের তথ্য মতে,মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত যে সংখ্যক ডাক্তার থাকার কথা তার ৩ ভাগের ১ ভাগ এমবিবিএস ও সহকারি ডাক্তার দিয়ে সেবার নামে চলেছ ফাঁকিবাজি কার্যক্রম!


‎ইতিপূর্বেও অভিযোগের পাহাড় নিয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হলেও আসেনি সেবা দানে কোন পরিবর্তন ‎এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত তত্বাবধায়ক মোঃ ফয়েজ আহম্মেদ ফয়সাল দায় এড়িয়ে ভিন্ন প্রসঙ্গে গিয়ে বলেন,আগের চেয়ে চিকিৎসার মান ভালো হয়েছে। মিটিং শেষে ডাক্তার সকলেই রোগী দেখছে।

‎তবে,”সেবাদান কারী প্রতিষ্ঠান কিভাবে সেবা বন্ধ রেখে সেবার মান উন্নয়ন করবে” এটাই প্রশ্ন এখন জনমনে!


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

Copyright © 2025. All right reserved OnlinePress24
Theme Developed BY Global Seba