আজঃ বৃহস্পতিবার ৩০-১০-২০২৫ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

রোহিঙ্গা তহবিলে বিপর্যয় এড়াতে ইউনূসের আহ্বান, রেশন নেমে আসতে পারে ৬ ডলারে

  • আপডেটেড: শনিবার ২৭ Sep ২০২৫
  • / পঠিত : ৬৪ বার

রোহিঙ্গা তহবিলে বিপর্যয় এড়াতে ইউনূসের আহ্বান, রেশন নেমে আসতে পারে ৬ ডলারে

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টির এক ভয়াবহ আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তহবিল সংকটের কারণে সেখানে ন্যূনতম জীবনমান বজায় রাখাও কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সতর্ক করেছে, জরুরি ভিত্তিতে নতুন তহবিল না এলে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক রেশন অর্ধেকে নামিয়ে মাথাপিছু মাত্র ৬ মার্কিন ডলারে সীমিত করতে হতে পারে। এমন পরিস্থিতি রোহিঙ্গাদের অনাহার ও অপুষ্টির দিকে ঠেলে দেবে, যা তাদের মধ্যে আগ্রাসী মনোভাব তৈরি করতে পারে।

শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এই আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, তহবিল সংকট অব্যাহত থাকলে ক্যাম্পের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যাবে, যা ক্যাম্পের সীমানা ছাড়িয়েও বিস্তৃত হতে পারে। এ বিপর্যয়কর পরিস্থিতি এড়াতে তিনি বিদ্যমান দাতাদের সহায়তা বৃদ্ধি এবং নতুন দাতাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

ড. ইউনূস স্পষ্ট করে বলেন, রোহিঙ্গা সংকট কোনোভাবেই মিয়ানমার ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বিষয় নয়। বাংলাদেশ শুধু একটি দায়িত্বশীল প্রতিবেশী হিসেবে মানবিক দায়িত্ব পালন করে আসছে। এই সংকটের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী রোহিঙ্গারা এবং তাদের পরেই রয়েছে বাংলাদেশ। প্রায় আট বছর পার হলেও এই সংকটের কোনো সমাধান না হওয়ায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রাখতে হচ্ছে, যা তাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকেও আরও জটিল করে তুলেছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেসব বৈষম্যমূলক নীতি ও কর্মকাণ্ড আজকের এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে, তার সমাধান এবং প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা এখনই গ্রহণ করা সম্ভব। তার জন্য পূর্ণাঙ্গ জাতীয় রাজনৈতিক মীমাংসার অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই।’

তিনি আরও বলেন, রাখাইন অঞ্চলের সব জাতিসত্তার অংশগ্রহণে এমন একটি রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন, যেখানে রোহিঙ্গারা সমঅধিকার ও নাগরিকত্ব নিয়ে সমাজের অংশ হতে পারবে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমার সরকার ও রাখাইনের অন্যান্য অংশীদারদের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই সংকট সমাধানে প্রতিবেশী দেশগুলোকেও দায়িত্ব নিতে হবে। রাখাইনে স্থিতিশীলতা আনতে যেকোনো যৌথ আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন থেকে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে একটি সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা গৃহীত হবে।

ভাষণে প্রফেসর ইউনূস বৈশ্বিক সংঘাতের চিত্রও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ইউরোপ, দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের মতো বিশ্বের প্রায় সব প্রান্তেই সংঘাত দেখা যাচ্ছে। পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ ও নিরস্ত্রীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি জানান, প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর আগেই বাংলাদেশ পারমাণবিক নিরাপত্তা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশনে যোগ দিয়েছে, যা সর্বোচ্চ পারমাণবিক নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতার প্রতি দেশের অঙ্গীকারের প্রমাণ।

ট্যাগস :


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

Copyright © 2025. All right reserved OnlinePress24
Theme Developed BY Global Seba