আজঃ বৃহস্পতিবার ৩০-১০-২০২৫ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

হান্নান মাসউদের মুচলেকায় ছাড়া পাওয়া ‘সমন্বয়ক’ চাঁদাবাজির মামলায় রিমান্ডে

  • আপডেটেড: মঙ্গলবার ৩০ Sep ২০২৫
  • / পঠিত : ৩৯ বার

হান্নান মাসউদের মুচলেকায় ছাড়া পাওয়া ‘সমন্বয়ক’ চাঁদাবাজির মামলায় রিমান্ডে

 চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ ৪ জনের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আর শাহিন হোসেন নামে এক আসামিকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।

উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান এ আদেশ দেন।

গ্রেফতার অন্য আসামিরা হলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঢাকা মহানগর মোহাম্মদপুর থানার যুগ্ম সমন্বয়কারী আব্দুর রহমান মানিক, হাবিবুর রহমান ফরহাদ, মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাউসার আহমেদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মো. নাজমুল ইসলাম পাঁচ জনের ৭ দিনের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করেন। পরে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠিয়ে আজ রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন। রিমান্ড শুনানির জন্য তাদের আদালতে হাজির করা হয়। 

কাউসার আহমেদ বলেন, আমরা রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করি। সমন্বয়ক রাব্বির বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরে আরেকটি চাঁদাবাজির মামলা আছে। ধানমন্ডিতে চাঁদাবাজির ঘটনায় সমন্বয়ক হান্নান মাসুদ তাকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেয়। আসামি পক্ষের আইনজীবী সুমন পারভেজ ও মাসুদ রানা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত ৪ জনের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আর শাহিন হোসেনকে জেল গেটে ১ দিনের জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন। 

আগে, রবিবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চাঁদাবাজির সময় সেনাবাহিনী তাদের আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ।

রিমান্ড আবেদন বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে আসামিদের মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদের শনাক্ত এবং মূল রহস্য উদঘাটন করার জন্য গ্রেফতার ব্যক্তিদের পুলিশি হেফাজতে সাত দিন জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।

চাঁদাবাজির ওই ঘটনায় সেইফ হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক শিল্পী আক্তার আজ মোহাম্মদপুর থানার মামলা করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১২টার দিকে মো. শাহিনের গর্ভবতী স্ত্রীর অবস্থা জটিল হয়ে ওঠে। এ সময় তিনি সেইফ হাসপাতালে এসে ডেলিভারির অনুরোধ করেন। কর্তৃপক্ষ তাকে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তবে তার পুনঃপুন অনুরোধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত কাগজপত্রে সই নিয়ে ডেলিভারির কাজ শুরু করেন। তবে নরমাল ডেলিভারিতে একটি মৃত বাচ্চা প্রসব হয়। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় বাচ্চা মারা গেছে—এমন অভিযোগ তুলে মামলা করার হুমকি দেন তিনি। মামলার ভয় দেখিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল মালিকের ছেলে আবু সাঈদের কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন অভিযুক্তরা।

অভিযোগে আরও বলা হয়, চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা হাসপাতালের মেশিন ও সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে দেড় লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করেন। একপর্যায়ে আসামিরা সাঈদকে তুলে নিয়ে হত্যার হুমকি দেন। ভয়ে আসামিদের ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেন বাদী। এরপর আসামিরা চাঁদা নিয়ে চলে যায় এবং আরও টাকার জন্য চাপ দেয়। এরপর বিভিন্ন সময় আসামিরা মোবাইল ফোনে টাকা চায়। ২৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে আসামিরা ফের এসে ১ লাখ টাকা চাঁদা নেয়। এ সময় হাসপাতালের মালিক ফোন করলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে ৫ জনকে আটক করেন।

উল্লেখ্য, গত ১৯ মে রাতে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে হাক্কানী পাবলিশার্সের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার বাসা ঘেরাও করে উত্তেজিত জনতা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। জোর করে বাসার ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন তারা। ৯৯৯-এ কল করে পরিস্থিতি জানিয়ে অভিযোগ করার পর ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। গোলাম মোস্তফাকে গ্রেফতারে চাপ ও পুলিশের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন উপস্থিত কয়েকজন। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মোহাম্মদপুর থানার তৎকালীন সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ কয়েকজনকে হেফাজতে নেয় ধানমন্ডি থানা-পুলিশ। পরদিন ধানমন্ডি থানায় উপস্থিত হয়ে মুচলেকা দিয়ে সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ অন্যদের ছাড়িয়ে আনেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা আব্দুল হান্নান মাসউদ।

ট্যাগস :


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

Copyright © 2025. All right reserved OnlinePress24
Theme Developed BY Global Seba