- প্রথম পাতা
- অপরাধ
- অর্থনীতি
- আইন আদালত
- আন্তর্জাতিক
- আবহাওয়া
- ইসলামী বই
- উলামায়ে দেওবন্দ
- এক্সক্লুসিভ
- কৃষি
- খেলাধুলা
- জাতীয়
- জেলা সংবাদ
- ঈশ্বরদী
- কক্সবাজার
- কিশোরগঞ্জ
- কুড়িগ্রাম
- কুমিল্লা
- কুষ্টিয়া
- খাগড়াছড়ি
- খুলনা
- গাইবান্ধা
- গাজীপুর
- গোপালগঞ্জ
- চট্টগ্রাম
- চাঁদপুর
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ
- চুয়াডাঙ্গা
- জয়পুরহাট
- জামালপুর
- ঝালকাঠি
- ঝিনাইদহ
- টাঙ্গাইল
- ঠাকুরগাঁও
- ঢাকা
- দিনাজপুর
- নওগাঁ
- নড়াইল
- নরসিংদী
- নাটোর
- নারায়ণগঞ্জ
- নীলফামারী
- নেত্রকোনা
- নোয়াখালী
- পঞ্চগড়
- পটুয়াখালী
- পাবনা
- পিরোজপুর
- ফরিদপুর
- ফেনী
- বগুড়া
- বরগুনা
- বরিশাল
- বাগেরহাট
- বান্দরবান
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া
- ভোলা
- ময়মনসিংহ
- মাগুরা
- মাদারীপুর
- মানিকগঞ্জ
- মুন্সীগঞ্জ
- মেহেরপুর
- মৌলভীবাজার
- যশোর
- রংপুর
- রাঙ্গামাটি
- রাজবাড়ী
- রাজশাহী
- লক্ষ্মীপুর
- লালমনিরহাট
- শরীয়তপুর
- শেরপুর
- সাতক্ষীরা
- সাতক্ষীরা
- সিরাজগঞ্জ
- সিলেট
- সুনামগঞ্জ
- হবিগঞ্জ
- তথ্যপ্রযুক্তি
- ধর্ম
- নির্বাচন
- প্রবাস
- বাংলাদেশ
- বিনোদন
- ব্যবসা-বানিজ্য
- রাজনীতি
উপমহাদেশের স্বাধীনতা ও দেওবন্দি আলেমদের ত্যাগ ---ওলিউল্লাহ মুহাম্মাদ
- আপডেটেড: রবিবার ০৫ Oct ২০২৫
- / পঠিত : ৪৯ বার

উপমহাদেশের ইতিহাসে উলামায়ে দেওবন্দ শুধু একটি শিক্ষাধারার নাম নয়; এটি স্বাধীনতার সংগ্রাম, সামাজিক সংস্কার ও ইসলামী চেতনার জাগরণের প্রতীক। তাঁদের অবদান এমন গভীর ও বিস্তৃত যে, ইতিহাসের পাতায় প্রতিটি অধ্যায়ে তাদের নাম রক্তাক্ষরে খোদাই হয়ে আছে।
১৮০৩ সালে যখন ব্রিটিশরা দিল্লি দখল করে নেয়, তখন হযরত শাহ আব্দুল আজিজ দেহলবী (রহ.) যুগান্তকারী এক ফতোয়া দেন। তিনি ঘোষণা করেন—ভারত আর দারুল ইসলাম নেই, বরং দারুল হারব। কারণ মুসলমানদের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব ও শরিয়াহভিত্তিক শাসন সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়েছে। এই ফতোয়া ছিল মুসলিম সমাজকে আত্মমর্যাদাবান করে তোলার প্রথম স্ফুলিঙ্গ, যা স্বাধীনতার সংগ্রামের মশাল প্রজ্বলিত করে।
এই ফতোয়ারই বাস্তব রূপায়ন করেছিলেন শাহ ইসমাইল শহীদ (রহ.) ও সাইয়িদ আহমদ শহীদ (রহ.)। তাঁরা মুসলমানদের জাগিয়ে তুললেন ব্রিটিশবিরোধী প্রতিরোধে। ১৮৩১ সালের ঐতিহাসিক বালাকোটের যুদ্ধে অসংখ্য আলেম ও সংগ্রামী শাহাদাত বরণ করেন। যদিও সামরিকভাবে এই যুদ্ধ সফল হয়নি, কিন্তু এর মাধ্যমে উম্মাহর অন্তরে স্বাধীনতার স্বপ্ন অটলভাবে রোপিত হয়।
১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ—যা প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ নামে পরিচিত—তাতেও আলেমদের ত্যাগ ও নেতৃত্ব ছিল অবিস্মরণীয়। হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী (রহ.), মাওলানা কাসিম নানুতুবী (রহ.), মাওলানা রশীদ আহমাদ গাঙ্গোহী (রহ.) প্রমুখ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অংশ নেন। শামলির যুদ্ধে তাঁরা ব্রিটিশ সেনাদের মোকাবিলা করেন। যদিও বিদ্রোহ দমন করা হয়েছিল, তবে এই আন্দোলন মুসলিম জাতিকে নতুন করে চেতনা দিয়েছিল। কিন্তু পরাজয়ের পর অসংখ্য আলেমকে ফাঁসি দেওয়া হয়, মাদরাসা ও মসজিদ ধ্বংস করা হয়, সমাজে এক শূন্যতার সৃষ্টি হয়।
এই শূন্যতা পূরণের জন্য ১৮৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় দারুল উলুম দেওবন্দ। এক সাধারণ মসজিদের বারান্দায় কয়েকজন ছাত্র নিয়ে শুরু হওয়া এ মাদরাসার উদ্দেশ্য ছিল দ্বীন সংরক্ষণ, মুসলমানদের ঈমান অটুট রাখা, এবং নতুন প্রজন্মকে দীন ও নেতৃত্বের জন্য প্রস্তুত করা। খুব অল্প সময়েই দেওবন্দ হয়ে ওঠে ইসলামী শিক্ষার কেন্দ্র, আর এখান থেকেই গড়ে ওঠে ঔপনিবেশিক বিরোধী নেতৃত্ব।
এই ধারাবাহিকতার অন্যতম উজ্জ্বল নাম শাইখুল হিন্দ মাওলানা মাহমুদুল হাসান দেওবন্দী (রহ.)। তিনি শুধু একজন শিক্ষাবিদ নন, বরং স্বাধীনতার আন্দোলনের প্রধান অগ্রদূত। তাঁর নেতৃত্বেই শুরু হয় বিখ্যাত রেশমি রুমাল আন্দোলন। এর মাধ্যমে বিদেশি মুসলিম শক্তির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের পরিকল্পনা করা হয়। ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে গেলে ব্রিটিশরা তাঁকে গ্রেফতার করে মাল্টার কারাগারে নির্বাসিত করে। কারাগারে থেকেও তিনি স্বাধীনতার স্বপ্ন জাগ্রত রাখেন। তাঁর সহযোদ্ধা মাওলানা উবায়দুল্লাহ সিন্ধি আফগানিস্তান, তুরস্ক ও জার্মানির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে আন্দোলনকে বৈশ্বিক রূপ দেন।
এরপর আসে খিলাফত আন্দোলন। ১৯১৯ সালে উসমানীয় খেলাফতের পতন রোধের জন্য এবং মুসলিম ঐক্য রক্ষার জন্য যে সর্বভারতীয় আন্দোলন শুরু হয়, সেখানে উলামায়ে দেওবন্দ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। লাখো মানুষকে তারা আন্দোলনের মাঠে নামিয়েছিলেন। আন্দোলনের মাধ্যমে সাধারণ মুসলমান বুঝতে পারে—ইসলামের দায়িত্ব কেবল মসজিদের দেয়ালে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি দাসত্ব থেকে মুক্তি এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামও।
এই আন্দোলনের আরেক উজ্জ্বল নাম শাইখুল ইসলাম হুসাইন আহমাদ মাদানী (রহ.)। তিনি দীর্ঘকাল ব্রিটিশ কারাগারে নির্যাতিত হন। কিন্তু ন্যায় ও স্বাধীনতার পথ থেকে সরে যাননি। তাঁর চিন্তা ও রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনকে নতুন মাত্রা দিয়েছিল। তিনি দেখিয়েছেন, আলেমরা শুধু ইবাদতের শিক্ষক নন, বরং জাতির মুক্তির কাণ্ডারি।
উলামায়ে দেওবন্দের এই দীর্ঘ ইতিহাসে একদিকে আছে জ্ঞানচর্চা, তাকওয়া ও আধ্যাত্মিকতা; অন্যদিকে আছে স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগ, আন্দোলন ও সংগ্রাম। তারা কখনো ভয় পাননি নির্যাতনের, নির্বাসনের কিংবা কারাগারের অন্ধকারের। বরং প্রতিটি কষ্টকে করেছেন সম্মানের তাজ, প্রতিটি রক্তবিন্দুকে করেছেন উম্মাহর জাগরণের মশাল।
যারা বলেন উলামায়ে দেওবন্দ রাজনীতি বা জাতীয় স্বাধীনতার কাজে অংশগ্রহণ করেননি, তাদের জন্য ইতিহাসই উত্তর দেয়। উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম সারিতেই ছিলেন উলামায়ে দেওবন্দ। তাঁদের ফতোয়া, সংগ্রাম, রক্ত এবং আত্মত্যাগ জাতিকে দিয়েছে স্বাধীনতার স্বপ্ন।

নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন
















