আজঃ বৃহস্পতিবার ৩০-১০-২০২৫ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া, কাতার ও মিশরের প্রশংসা

  • আপডেটেড: শনিবার ০৪ Oct ২০২৫
  • / পঠিত : ৩৬ বার

ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া, কাতার ও মিশরের প্রশংসা

 গাজায় যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় হামাসের ইতিবাচক সাড়াকে স্বাগত জানিয়েছে কাতার ও মিশর। উভয় দেশ আশা প্রকাশ করেছে যে, এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য শিগগিরই বিস্তারিত আলোচনা শুরু হবে। শনিবার ভোরে কাতার ও মিশর এই প্রতিক্রিয়া জানায়।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি এবং পরিকল্পনায় বর্ণিত বিনিময় কাঠামোর আওতায় সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তুতিকে কাতার স্বাগত জানায়’। আনসারি পুনর্ব্যক্ত করেন যে, জিম্মিদের নিরাপদ ও দ্রুত মুক্তি এবং গাজায় ফিলিস্তিনিদের রক্তপাত বন্ধে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য ট্রাম্পের আহ্বানের প্রতি কাতারের সমর্থন রয়েছে।

মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কায়রো ‘গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ বন্ধে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিকল্পনায় হামাসের দেওয়া বিবৃতিকে সাধুবাদ জানাচ্ছে।’

বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়, এই সাড়া ফিলিস্তিনি জনগণের রক্তপাত এড়ানো, নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা এবং এই অঞ্চলের ইতিহাসের একটি অন্ধকার অধ্যায়ের অবসানে হামাস ও সব ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর আগ্রহের প্রতিফলন। মিশর গাজায় যুদ্ধ শেষ করা, পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত করা বা ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করার বিরোধিতা এবং গাজার পুনর্গঠন পরিকল্পনার বিষয়ে ট্রাম্পের পূর্ণ প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেছে।

এদিকে, মিশরের কায়রো নিউজ টিভি একজন অবগত মিশরীয় সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ‘ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি বন্দিদের মধ্যে সম্ভাব্য বিনিময়ের শর্ত নিয়ে আলোচনার প্রস্তুতি চলছে’। ওই সূত্র আরও জানায়, গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ফিলিস্তিনি সংলাপ আয়োজনের কাজও চলমান রয়েছে।

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, তিনি বিশ্বাস করেন হামাস ‘একটি স্থায়ী শান্তির জন্য প্রস্তুত’ এবং ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে তিনি ইসরায়েলকে ‘অবিলম্বে গাজায় বোমা হামলা বন্ধ করার’ আহ্বান জানান। হামাস জীবিত ও মৃত সব ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে এবং গাজার প্রশাসন একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে তাদের প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করেছে। তবে তারা জোর দিয়ে বলেছে যে, উপত্যকার ভবিষ্যৎ এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকার একটি বৃহত্তর জাতীয় ফিলিস্তিনি কাঠামোর মধ্যে সমাধান করতে হবে।

তেল আবিবের হিসাব অনুযায়ী, গাজায় এখনো ৪৮ জন ইসরায়েলি বন্দি রয়েছে, যাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ইসরায়েল প্রায় ১১,১০০ ফিলিস্তিনিকে বন্দি করে রেখেছে, যাদের অনেকেই নির্যাতন, ক্ষুধা ও চিকিৎসা অবহেলার শিকার।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর ট্রাম্প ২০-দফা একটি পরিকল্পনা উন্মোচন করেন, যার মধ্যে ইসরায়েলের অনুমোদনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি, যুদ্ধবিরতি এবং হামাসের নিরস্ত্রীকরণের কথা বলা হয়েছে। সোমবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই পরিকল্পনাকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, এটি ‘ইসরায়েলের যুদ্ধের উদ্দেশ্যগুলো অর্জন করবে’।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৬৬,৩০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বারবার সতর্ক করেছে যে, উপত্যকাটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে এবং সেখানে ক্ষুধা ও রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

ট্যাগস :


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

Copyright © 2025. All right reserved OnlinePress24
Theme Developed BY Global Seba