আজঃ রবিবার ০২-১১-২০২৫ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

উত্তেজনার মধ্যেই শান্তি আলোচনার টেবিলে কাবুল-ইসলামাবাদ

  • আপডেটেড: শুক্রবার ৩১ Oct ২০২৫
  • / পঠিত : ২৬ বার

উত্তেজনার মধ্যেই শান্তি আলোচনার টেবিলে কাবুল-ইসলামাবাদ

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে আগামী সপ্তাহে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে একটি শান্তি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বৈঠকের আগে দুই দেশ যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে সম্মত হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। তবে এই কূটনৈতিক উদ্যোগের মধ্যেই আফগান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানি মন্তব্য করেছেন, পাকিস্তানে কেউ কেউ ‘আগুন নিয়ে খেলছে’।

হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী, আগামী ৬ নভেম্বর এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফেরার পর দুই দেশের মধ্যে হওয়া সবচেয়ে প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘর্ষের পর এটিই হতে যাচ্ছে প্রথম কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক। সম্প্রতি গত ৯ অক্টোবর কাবুলে একাধিক বিস্ফোরণে ৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত ও শতাধিক আহত হওয়ার ঘটনায় আফগান কর্তৃপক্ষ সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করেছিল।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সব পক্ষ যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে সম্মত হয়েছে। এর বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে ইস্তাম্বুলে ৬ নভেম্বরের বৈঠকে।’ এর আগে তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চললেও গত বুধবার ইসলামাবাদ আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।

ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানি সতর্ক করে বলেন, ‘আমরা মুসলমান, ভাই ও প্রতিবেশী। কিন্তু পাকিস্তানে কেউ কেউ জেনেশুনে বা অজান্তেই আগুন ও যুদ্ধ নিয়ে খেলছে। আফগানরা যুদ্ধ চায় না, কিন্তু দেশ রক্ষা করা আমাদের অগ্রাধিকার।’

পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন পিটিভি এবং আফগানিস্তানের সরকারি গণমাধ্যম আরটিএ জানিয়েছে, আলোচনা পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আফগান কর্মকর্তারা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি। আরটিএ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের অযৌক্তিক দাবির কারণেই আগের আলোচনা বাতিল হয়েছিল। ইসলামাবাদ অভিযোগ করে আসছে, তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে, যা আফগানিস্তানের বর্তমান সরকার বরাবরই অস্বীকার করেছে।

এদিকে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এলেও গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দুই দেশের সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। এতে সীমান্ত অঞ্চলের বাণিজ্য ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কান্দাহারের কাপড় ব্যবসায়ী নাজির আহমদ বলেন, ‘আমাদের জাতি ক্লান্ত, তাদের জাতিও ক্লান্ত।’ অন্যদিকে, পাকিস্তানের সীমান্ত শহর চামানের যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার বলেন, ‘বাণিজ্য পুরোপুরি থেমে গেছে। দুটোই মুসলিম রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও দুই দেশই ক্ষতির মুখে পড়েছে।’

জাতিসংঘের আফগান মিশন (ইউএনএএমএ) জানায়, গত সপ্তাহের সহিংসতায় অন্তত ৫০ জন আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৪৪৭ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের ২৩ জন সেনা নিহত ও ২৯ জন আহত হওয়ার কথা জানালেও বেসামরিক হতাহতের কোনো তথ্য দেয়নি।

ট্যাগস :


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

Copyright © 2025. All right reserved OnlinePress24
Theme Developed BY Global Seba